আজ শনিবার, ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বন্দরে শিশু ফাতেমা নির্যাতনের ঘটনায় পাষন্ড সৎ মা আটক

বন্দরে শিশু ফাতেমা

বন্দরে শিশু ফাতেমা

বন্দর প্রতিনিধি:
বন্দরে শিশু ফাতেমা আক্তারকে (৫) নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় অবশেষে সৎ মা মুন্নী বেগম (২৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার ভোরে রাজধানী ঢাকার উত্তর বাড্ডা এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর পূর্বে শনিবার রাতে নির্যাতনের শিকার শিশুর দাদা মোঃ মহিউদ্দিন মিয়া তার পাষন্ড পুত্রবধূ মুন্নী বেগমকে একমাত্র আসামী করে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৯(৫)১৮ ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৪ এর ২(ক) । পুলিশ ওই মামলার প্রেক্ষিতে উত্তর বাড্ডা থেকে রোববার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করে। বন্দর থানার ওসি শাহীন মন্ডল মুন্নী বেগমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত মুন্নী বেগম বন্দরের ঘাড়মোড়া এলাকার দিনমজুর রোমান মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী।

গত ১ মে মুন্নী বেগম এ ঘটনা ঘটালেও সেটি এতদিন গোপন ছিল। পরে গত শনিবার সকালে এলাকবাসী ঘটনাটি জানতে পেরে মুন্নী বেগমের শাস্তির দাবিতে তাকে বাড়িতে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুন্নী বেগমকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করলেও পরিবারের কারও তাৎক্ষণিক অভিযোগ না থাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে বিচারের ভার দিয়ে চলে আসে। কিন্তু অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হয়েই মুন্নী বেগম পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। সে পালিয়ে যাওয়ায় তার শ্বশুর মোঃ মহিউদ্দিন শনিবার রাতেই তাকে একমাত্র আসামী করে বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মোঃ মহিউদ্দিন তার মামলায় উল্লেখ করেন, তার ছেলে রোমানের প্রথম স্ত্রী জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব রয়েছে। তার ঘরে রাজ (৬) নামে এক ছেলে এবং ফাতেমা আক্তার (৫) নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। শেফালী সৌদি আরব যাবার পর রোমান মুন্নী বেগমকে বিয়ে করে। মুন্নীর ঘরেও ২ সন্তান রয়েছে। কিন্তু মুন্নী তার বড় সতীনের সন্তানদের কারণে অকারণে মারধর ও বকাঝকা করতো।

গত ১ মে মুন্নী শিশু ফাতেমার হাত-পা ও মুখ বেঁধে খুন্তি গরম করে গোপনাঙ্গ ও দুই উরুতে ছ্যাঁকা দেয়। এতে শিশুটি গুরুতর আহত হয়। ফাতেমার বাবা রোমান মিয়া বাড়ি ফিরে এ ঘটনা জানতে পেরে ফাতেমাকে গোপনে নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে। বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও গত শনিবার তা প্রকাশ হয়ে পড়ে। তখন স্থানীয় এলাকাবাসী মুন্নীর বিচার দাবিতে তাকে বাড়িতে আটকে রাখে। পুলিশ এসে তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে বিচারের দায়িত্ব পঞ্চায়েত কমিটির কাছে দিয়ে যাবার পর মুন্নী বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

বন্দর থানার ওসি শাহীন মন্ডল বলেন, মামলায় মুন্নী বেগম একমাত্র আসামী। যেহেতু মামলায় সে একমাত্র আসামী এবং ঘটনাটি সেই ঘটিয়েছি তাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। গ্রেপ্তার পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ